Jump to content
Please ensure regular participation (posting/engagement) to maintain your account. ×
The Bangladesh Defence Analyst Forum

Patriot_68

Verified Members
  • Posts

    63
  • Joined

  • Last visited

  • Days Won

    9

Everything posted by Patriot_68

  1. বাংলাদেশ-তুরস্ক সম্পর্কের বাঁকবদল https://www.prothomalo.com/bangladesh/বাংলাদেশ-তুরস্ক-সম্পর্কের-বাঁকবদল রাহীদ এজাজ ঢাকা প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪: ৩২ অ+অ- বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে গত দু-এক বছরে বিশেষভাবে মনোযোগী হয়েছে তুরস্ক একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে কেন্দ্র করে সম্পর্ককে চরম তিক্ততায় নিয়ে গিয়েছিল তুরস্ক। অতীতের সেই তিক্ততা সরিয়ে তুরস্ক এখন প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা ও বিনিয়োগে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে মনোযোগ দিচ্ছে। কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষকেরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুরস্ক আন্তর্জাতিক পরিসরে নিজের অবস্থান সুসংহত করতে চাইছে। বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে নিজের জোরালো অবস্থান গড়ে তুলতে আঙ্কারা এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার ব্যাপারে বিশেষভাবে মনোযোগী হয়ে উঠেছে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তুরস্ক ২০১৯ সাল থেকে ‘এশিয়া এনিউ’ উদ্যোগের মাধ্যমে এই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে নানান খাতে সহযোগিতা বাড়ানো শুরু করেছে। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বিশেষ জোর দিচ্ছে আঙ্কারা। বিজ্ঞাপন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফাইল ছবি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে গত দু-এক বছরে ব্যবসা ও বিনিয়োগ, বিশেষ করে সমরাস্ত্র খাতে সহযোগিতায় বিশেষভাবে মনোযোগী হয়েছে তুরস্ক। করোনা সংক্রমণকালে গত বছরের ডিসেম্বরে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলিত সাভাসগলু বাংলাদেশ সফর করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের কাছে তুরস্কের সমরাস্ত্র বিক্রির আগ্রহের কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের বৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তার কথা জানান তিনি। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের জুনে আঙ্কারায় দুদেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হয়। ইতিমধ্যে এ-সংক্রান্ত কেনাকাটা শুরু হয়েছে। গত মাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ আট দিনের সরকারি সফরে তুরস্কে যান। এ সময় দুই দেশের সহযোগিতার অন্যান্য উপাদানের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে জানা যায়। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলিত সাভাসগলু আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আবার ঢাকায় আসছেন। তাঁর আসন্ন ঢাকা সফরে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো আভাস দিয়েছে। তুরস্কের দৈনিক আল সাবাহর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের কাছে ইস্তাম্বুল ক্লাসের ফ্রিগেট বিক্রিতে আগ্রহী আঙ্কারা। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে। বাঁকবদলের দুই উপাদান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ছবি: রয়টার্স সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুরস্কের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের যে ঊর্ধ্বমুখিতা, তা পাঁচ থেকে সাত বছর আগে ভাবা যেত না। বিশেষ করে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে সামনে এনে বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্ক সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি করেছিল। এই বিচারের প্রকাশ্য বিরোধিতা, বিচারে সরাসরি হস্তক্ষেপ, ঢাকা থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের মতো ঘটনা ঘটে। কিন্তু এ সময় বাংলাদেশ সংযত থেকেছে। তৎকালীন দায়িত্বে থাকা এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক বলেন, তুরস্কের সঙ্গে শীতল সম্পর্কের পর্বে বাংলাদেশ কখনো ‘ইটের বদলে পাটকেল’ নীতিতে হাঁটেনি। বরং বরাবর সংযত থেকেছে। কাছাকাছি সময়ের দুটি ঘটনা দুদেশের সম্পর্কের বাঁকবদলে বড় ভূমিকা রেখেছে। প্রথমটি হলো, ২০১৬ সালের জুলাইয়ে তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পরপরই দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিঠি। দ্বিতীয়টি, ২০১৭ সালের আগস্টের রোহিঙ্গাঢলের পর সেপ্টেম্বরে তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিন এরদোয়ানের বাংলাদেশ সফরে এসে কক্সবাজারের শিবির পরিদর্শন। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে কেন্দ্র করে তুরস্ক যে বৈরী আচরণ করেছিল, সেটিকে সামনে না এনে ঐতিহাসিকভাবে আঙ্কারার সঙ্গে ঢাকা যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে মনোযোগী, সেটির প্রমাণ তারা পেয়েছিল সেদেশে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পরপরই শেখ হাসিনার বার্তায়। তাই রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকে তুরস্ক সম্পর্কোন্নয়নের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হিসেবে কাজে লাগায়। তারই ধারাবাহিকতায় তুরস্কের তখনকার প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম বাংলাদেশ সফর করেন। ডিসেম্বর ২০১২: পরিচয় গোপন করে তুরস্কের এনজিও প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফর। ডিসেম্বর ২০১২: গোলাম আযমসহ জামায়াত নেতাদের ফাঁসি বন্ধে তুরস্কের চিঠি। মে ২০১৬: নিজামীর ফাঁসির পর তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে সাময়িক প্রত্যাহার, ঢাকার পাল্টা পদক্ষেপ। জুলাই ২০১৬: তুরস্কের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর এরদোয়ানকে সমর্থন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর চিঠি। আগস্ট ২০১৭: রোহিঙ্গাঢলের পর তুরস্কের ফার্স্ট লেডির কক্সবাজার সফর। সেপ্টেম্বর ২০২০: আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাস উদ্বোধনের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তুরস্ক সফর। ডিসেম্বর ২০২০: ঢাকায় এসে বাংলাদেশের কাছে সমরাস্ত্র বিক্রির ঘোষণা তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। জুন ২০২১: বাংলাদেশে সমরাস্ত্র বিক্রির জন্য তুরস্কের প্রতিরক্ষা চুক্তি সই। জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব ও নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্সের (এসআইপিজি) ফেলো অধ্যাপক মো. শহীদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ঐতিহাসিকভাবে দুই দেশের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে ঘিরে এই সম্পর্কে তিক্ততা শুরু করেছিল তুরস্ক। তবে বাংলাদেশ সতর্ক থেকেছে। সেই সঙ্গে বাস্তববাদীও। এই বিষয়টি তুরস্কও পরে বুঝতে পারে। ফলে তারা এখন সম্পর্কোন্নয়নে জোর দিচ্ছে। তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিন এরদোয়ান বাংলাদেশ সফরে এসে কক্সবাজারের শিবির পরিদর্শন করেন ফাইল ছবি পররাষ্ট্রনীতির নতুন অগ্রাধিকার ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার প্রেক্ষাপটে এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে তুরস্ক। ২০১৯ সালের আগস্ট থেকে ‘এশিয়া এনিউ’ উদ্যোগের মাধ্যমে তুরস্ক এই কাজটি করছে। উদ্যোগে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন, বেসরকারি খাতের ব্যবসার সামর্থ্য বাড়ানো, শিক্ষা খাতে সহযোগিতা বাড়ানো ও এশিয়ার দেশগুলোর সমাজের বিভিন্ন স্তরের যোগাযোগ বৃদ্ধি—এই চারটি ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হচ্ছে। আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাস উদ্বোধনের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তুরস্ক সফর করেন ফাইল ছবি জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘তুরস্কের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়টি পরস্পর স্বার্থসংশ্লিষ্ট। দুই দেশের সম্পর্কে চড়াই-উতরাই তো ছিলই। কিন্তু আমাদের সংবেদনশীলতার গুরুত্ব তারা বুঝতে পেরেছে। তাদের অবস্থানও আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য ও ওআইসিতে সৌদি আরবের বিকল্প শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার বিষয়ে আঙ্কারার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। এটা ঠিক যে রোহিঙ্গা সংকট দুই দেশকে অনেক কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। সেটাকে উপজীব্য করে সমরাস্ত্র উৎপাদনকারী হিসেবে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতায়, বিশেষ করে আধুনিক সমরাস্ত্র বিক্রিতে জোর দিচ্ছে। আবার দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের উজ্জ্বল ও ভারসাম্যমূলক অবস্থানকে বিবেচনায় নিয়ে তারা সম্পর্ক জোরদারে মনোযোগী হয়েছে।’ দূতাবাসের সক্রিয় ভূমিকা ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পান এম আল্লামা সিদ্দিকী। কিন্তু সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে তাঁকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। পরে আঙ্কারা ফিরে গিয়ে তিনি দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নে নানা ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। এই অনুষ্ঠানগুলোয় অতিথিদের বড় অংশটি ছিলেন তুরস্কের নাগরিক। পাশাপাশি দেশটির গণমাধ্যম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী সংগঠন ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থেকে সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়। অন্যদিকে বাংলাদেশ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিকভাবে তুরস্কের কোনো প্রশ্ন থেকে থাকলে দূতাবাসের পক্ষ থেকে তার জবাব দিতে দ্বিধা করা হয়নি। দুই দেশের সম্পর্ক তিক্ততার পর্ব থেকে উল্টোদিকে মোড় নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতৃত্বের আশীর্বাদে আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাস বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে বলে কূটনৈতিক সূত্র জানায়। প্রতিরক্ষা সহযোগিতা-কেনাকাটায় গুরুত্ব তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলিত সাভাসগলু গত বছর ঢাকা সফরের সময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তাঁদের প্রতিরক্ষা পণ্যের গুণগত মান অত্যন্ত ভালো। দামেও সুলভ। এগুলো কেনার জন্য কোনো শর্ত আরোপ করা হয় না। তুরস্ক প্রতিরক্ষা খাতে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও যৌথ উৎপাদনে রাজি। গত জুন মাসে তুরস্কের সমরাস্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রকেটসানের সঙ্গে সমরাস্ত্র উৎপাদনের বিষয়ে বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করে। পরে তুরস্কের ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট ইসমাইল ডেমি এক টুইটে বলেন, রকেটসান থেকে বিভিন্ন সরঞ্জাম রপ্তানির জন্য দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।’ জানতে চাইলে নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, সমরাস্ত্র উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে তুরস্কের অবস্থা বেশ ভালো। ন্যাটোর সদস্য দেশ হওয়ায় তুরস্কের উৎপাদিত সমরাস্ত্র গুণগতমানে যেমন ভালো, দামেও ইউরোপের দেশগুলোর তুলনায় সাশ্রয়ী। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতি হওয়ায় তুরস্ক বাংলাদেশে অস্ত্র বিক্রিতে মনোযোগ দিচ্ছে। বাংলাদেশও যেহেতু সমরাস্ত্র সংগ্রহের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনতে চাইছে, সে ক্ষেত্রে উৎস হিসেবে তুরস্ক মানানসই। বড় ধরনের কেনাকাটা গত কয়েক বছরে শুরু হয়েছে। সেটা ভবিষ্যতে বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। উল্লেখযোগ্য দুই বিনিয়োগ দুই দেশের সম্পর্কে বাঁকবদলের পর্বে ব্যবসা-বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও গুণগত পরিবর্তন দৃশ্যমান। এর মধ্যে তুরস্কের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কোচ হোল্ডিংসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আর্সেলিক এ এস ২০১৯ সালে সিঙ্গার বাংলাদেশে ৭৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানটির ৫৭ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়ে। তুরস্কের বিনিয়োগের পর এখন এটি বেকো সিঙ্গার নামে বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করছে। কোচ হোল্ডিংসের অন্যতম সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইগ্যাজ ২০২০ সালে ইউনাইটেড গ্রুপের সঙ্গে জ্বালানি উৎপাদনে ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা বাড়াতে বিশেষ আগ্রহের কথা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান উল্লেখ করেছেন। গত বছর আঙ্কারা সফরের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তাঁর সঙ্গে সৌজন্যসাক্ষাৎ করেন। এ সময় এরদোয়ান বলেন, দুই দেশের মধ্যে প্রতিবছর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ এখন ১০০ কোটি ডলার। শিগগির তিনি এই ব্যবসার পরিমাণ ২০০ কোটি ডলারে নিয়ে যেতে চান। পাকিস্তানের প্রভাব কাটেনি বাংলাদেশের অতীত-বর্তমান নিয়ে পাকিস্তানের ভাষ্যই তুরস্কের সমাজের বড় অংশটি এখন পর্যন্ত বিশ্বাস করে। তুরস্কে কাজ করা কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলে এমনটা জানা গেছে। তুরস্ক থেকে ঢাকায় ফেরা এক কূটনীতিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশ নিয়ে দেশটি যে এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের ভাষ্যকেই বিশ্বাস করে, ২০১৭ সালের একটি ঘটনাও তার সাক্ষ্য দেয়। সে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে আঙ্কারার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশের তখনকার রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দিকী। বক্তৃতার এক পর্যায়ে এক ছাত্র বলে ওঠেন, ‘আপনারা তো আলেমদের (মানবতাবিরোধী অপরাধী) ফাঁসি দিচ্ছেন।’ নতুন চ্যালেঞ্জ কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রাচ্য তথা মুসলিম বিশ্বে নেতৃত্বের ক্ষেত্রে সৌদি আরব ও তুরস্কের ঘিরে বলয় তৈরির পর্বে ভারসাম্য বজায় রাখছে বাংলাদেশ। আবার বাংলাদেশের বাজার, ধারাবাহিক অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ও ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানকে বিবেচনায় নিয়েছে তুরস্ক। রোহিঙ্গা সংকটকে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের পাশে আসাটা জরুরি মনে করেছে আঙ্কারা। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে তুরস্কের ভূমিকার মূলে ছিল দেশটির ক্ষমতাসীন দল এ কে পার্টির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক মতাদর্শের সাযুজ্য। বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সম্পর্কে পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু তুরস্কের ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক দর্শনের এখনো কোনো পরিবর্তন হয়নি। কাজেই এই জায়গায় বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে। পাশাপাশি আফগানিস্তানে তালেবান আবার ক্ষমতায় আসায় সৌদি আরব ও তুরস্কের অবস্থানের ক্ষেত্রে নতুন সমীকরণ তৈরি হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে মুসলিম বিশ্বের দুই ক্ষমতাধর দেশের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে চলাটা বাংলাদেশের জন্য হবে এক নতুন চ্যালেঞ্জ।
  2. https://bangla.bdnews24.com/science/article1940521.bdnews এবার ‘আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণে যাচ্ছে বাংলাদেশ শামীম আহমেদ, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম Published: 15 Sep 2021 01:54 AM BdST Updated: 15 Sep 2021 01:54 AM BdST বাংলাদেশের দ্বিতীয় কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের ধরন কেমন হবে, তা চূড়ান্তের পর খুব দ্রুত এটি নিয়ে কাজ শুরুর পরিকল্পনা চলছে। বঙ্গবন্ধু-১ এর পর দেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইটটি হবে একটি ‘আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট’, যা ভূপৃষ্ঠের ছবি তোলার মাধ্যমে দেশের ফসল উৎপাদনের চিত্র, বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণসহ বিশাল সমুদ্র অঞ্চল নজরদারিতে সহায়তা করবে। সরকারের চলতি মেয়াদেই দেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা সম্ভব হবে আশা প্রকাশ করছেন বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড- বিসিএসসিএল এর চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খুব দ্রুত এ কাজ আমরা করতে চাচ্ছি। জিটুজি (সরকার-টু-সরকার) প্রক্রিয়ায় আমরা এ স্যাটেলাইট কেনা এবং উৎক্ষেপণে চিন্তাভাবনা করছি।” আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট পৃথিবী পৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশের ছবি তুলতে এবং পৃথিবী পৃষ্ঠ নিরীক্ষণ করতে ব্যবহার করা হয়। দেশের প্রথম বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ একটি ‘জিওস্টেশনারি কমিউনিকেশন’ স্যাটেলাইট, যেটি শুধু যোগাযোগের কাজে লাগছে। বিসিএসসিএল চেয়ারম্যান বলেন, “দেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে ফ্রান্সের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রাইস-ওয়াটার হাউজ কুপারসের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। “পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমরা ঠিক করেছি দ্বিতীয় স্যাটেলাইট হবে ‘আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট’।” এ স্যাটেলাইট দিয়ে নানা সুবিধা পাওয়া যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, “এটি দেশের ফসল উৎপাদনের চিত্র, বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণসহ দেশের বিশাল সমুদ্র অঞ্চল নজরদারিতে সহায়তায় করবে। “দেশের কাজের পাশাপাশি এ স্যাটেলাইট দিয়ে আয় করার সুযোগও থাকছে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চল এ স্যাটেলাইটের আওতায় থাকবে বলে সেসব এলাকার নানা তথ্য উপাত্ত বিক্রি করে আয় করা যাবে। কারণ সব দেশের এই স্যাটেলাইট নেই।” জিওস্টেশনারি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট ছাড়াও কমিউনিকেশন, রিমোট সেনসিং, নেভিগেশন, জিওসেনট্রিক অরবিট টাইপ, পোলার স্যাটেলাইটসহ নানা কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন স্যাটেলাইট রয়েছে। দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু-১ এর সিস্টেমের নকশা তৈরির মূল পরামর্শক ছিল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল’। এরপর এক হাজার ৯৫১ কোটি ৭৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকার চুক্তিতে স্যাটেলাইট সিস্টেম কেনা হয় ফ্রান্সের কোম্পানি তালিস এলিনিয়া স্পেস থেকে। ২০১৮ সালের ১২ মে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেইপ কেনাভেরালে কেনেডি স্পেস সেন্টারের লঞ্চ প্যাড থেকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট মহাকাশে যাত্রা করে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশন এর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ হয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী ৫৭তম দেশ। উৎক্ষেপণের ছয় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের নভেম্বরে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণও সম্পূর্ণভাবে বুঝে পায় বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণে যে খরচ হয়েছিল এবার তার চেয়ে কম হবে জানিয়ে শাহজাহান মাহমুদ বলেন, “বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর এর গ্রাউন্ড স্টেশনসহ সব ধরনের অবকাঠামো সুবিধা এখন রয়েছে। দ্বিতীয়টি উৎক্ষেপণের পর সেসব খরচ হবে না।” তিনি বলেন, “এটির জন্য অরবিটাল স্লট ভাড়া নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে খুব বেশি উপরে থাকবে না। স্লট ভাড়া নেওয়ার খরচটা বেঁচে যাবে। এটাকে লিইও বা লো আর্থ অরবিট স্যাটেলাইটও বলা হয় (LEO satellite)।” বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ স্থান থেকে ৩৬ হাজার কিলোমিটার দূরে স্থাপিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু-১ এর ঠিকানা হয়েছে ১১৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমার একটি অরবিটাল স্লটে। মস্কোভিত্তিক সংস্থা ইন্টারস্পুটনিক ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব স্পেস কমিউনিকেশনের কাছ থেকে ৪৫ বছরের জন্য ওই স্লট ভাড়া নিয়েছে বাংলাদেশ।
  3. If importing countries have no issue then its fine for us to earn hard currency exporting poison. Where from are they planning to source additional requirements of tobacco, I hope not by expanding their cultivation in Bangladesh.
  4. As EV are replacing traditional hydrocarbon fuel driven vehicles, I guess demand for engine filters will drop in coming days
  5. ASEAN is helping the junta to sustain backed by China and Russia.
  6. As usual. Our country is a fertile land for demotivating innovative minds. See the example of Globe Biotech vaccine. We did not even bother to give it a simple try.
  7. As usual. Our country is a fertile land for demotivating innovative minds. See the example of Globe Biotech vaccine. We did not even bother to give it a simple try.
  8. Your regular participation and information sharing are needed as you are the nucleus of this forum. Like I have seen many breaking news recently in the main website and if those had been shared in the forum, it would have created a buzz among members.
  9. I couldn't find allocation for defense in this year's budget. Usually every year it is shown as a percentage of total allocation. Can anyone throw some light ?
  10. বাংলাদেশে অস্ত্র বিক্রি করতে চায় তুরস্ক কূটনৈতিক প্রতিবেদক ঢাকা প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০, ১৫: ৩৩ সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত সাভাসগলু ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন ছবি: রাহীদ এজাজ বাংলাদেশে প্রতিরক্ষাসামগ্রী বিক্রির পাশাপাশি বৃহদায়তন প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী তুরস্ক। ঢাকা সফররত তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত সাভাসগলু আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে মোমেনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। আজ দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর মেভলুত সাভাসগলু সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা তুরস্কের সঙ্গে বাণিজ্য, কোভিড-১৯, বহুপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী। আমরা তুরস্কের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।’ গত সেপ্টেম্বরে আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসের নতুন ভবন উদ্বোধন হয়েছে এবং আজ ঢাকায় তুরস্কের নতুন দূতাবাস ঢাকায় উদ্বোধন করা হবে বলে তিনি জানান। আজ বিকেলে বারিধারায় নতুন দূতাবাস উদ্বোধন করবেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আব্দুল মোমেন জানান, সবার জন্য সুবিধাজনক সময়ে বঙ্গবন্ধু ও কামাল আতাতুর্কের আবক্ষ মূর্তি দুই দেশে উন্মোচন করা হবে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলিত সাভাসগলুকে (ডানে) স্বাগত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ছবি: সংগৃহীত মেভলুত সাভাসগলু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান সূর্য। আর সব দেশের জন্য বাংলাদেশ আজ মডেল। এশিয়া আর ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বাংলাদেশ। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য, প্রতিরক্ষাসহ নানা খাতে বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ আছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মেভলুত সাভাসগলু বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি নিকট ভবিষ্যতে আমাদের বাণিজ্য ২০০ কোটি ডলার হবে, যা গত বছর ছিল প্রায় ১০০ কোটি ডলার। বাংলাদেশ বর্তমানে বিভিন্ন বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। তুরস্কের নির্মাণপ্রতিষ্ঠানগুলো পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম এবং চীনের পরেই তুরস্কের অবস্থান। এ খাতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।’ প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা বিষয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তুরস্কের প্রতিরক্ষাপণ্যের গুণগত মান অত্যন্ত ভালো, দাম অত্যন্ত সুলভ এবং এগুলো কিনতে কোনো শর্ত আরোপ করা হয় না। আমি নিশ্চিত, বাংলাদেশ এই সুবিধাগুলোর সুযোগ নেবে।’ প্রতিরক্ষা খাতে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও যৌথ উৎপাদনে রাজি আছে তুরস্ক জানিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সবকিছু তৈরি করি না, তবে ৭৫ শতাংশের বেশি আমরা উৎপাদন করি। এর কারণ হচ্ছে, এর আগে যখন সমস্যা চলছিল, তখন আমাদের বন্ধুরাও আমাদের প্রতিরক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করেনি এবং সে জন্য আমরা বেশির ভাগ পণ্য নিজেরাই উৎপাদন করি।’ এ খাতে তুরস্ক অনেক বিনিয়োগ করেছে জানিয়ে মেভলুত সাভাসগলু বলেন, ‘কয়েকটি দেশের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে পণ্য উৎপাদন করছি।’ রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে জানিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ বিষয়ে যথেষ্ট করছে না। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুধু কথা শুনতে চাই না, আমরা কাজেও তার প্রতিফলন দেখতে চাই।’ ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে মেভলুত সাভাসগলু বলেন, বাংলাদেশের এ বিষয়ে জাতিসংঘ এবং আইওএম, ইউএনএইচসিআরসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করা উচিত।
  11. Production of API is a much needed one. Because "It’s of some concern, then, that if Bangladesh potentially leaves the LDC category in 2024 it’ll no longer have access to a special World Trade Organisation (WTO) waiver which exempts the industry from the Agreement on Trade-Related Aspects of International Property Rights (TRIPS). The exemption has allowed government to pursue a dedicated industrial policy that’s spurred growth until now." https://www.un.org/ldcportal/what-ldc-graduation-will-mean-for-bangladeshs-drugs-industry/
  12. অগ্নিগর্ভ আরাকান নিয়ে নতুন উদ্বেগ আলতাফ পারভেজ প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২০, ১৪:৫৩ আগামী ৮ নভেম্বর মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন। এটি সে দেশে বেসামরিক সরকারের অধীনে প্রথম জাতীয় নির্বাচন। কিন্তু দেশটির বাংলাদেশ-সংলগ্ন রাখাইন প্রদেশে নির্বাচনী উত্তাপ নেই; বরং মানুষ যে যেদিকে পারছে, পালাচ্ছে। রাস্তায় বোমা ফাটছে; আকাশে উড়ছে সরকারি ড্রোন। পুরো প্রদেশ সন্ত্রস্ত। বাংলাদেশে রাখাইন প্রদেশ আরাকান নামে বেশি পরিচিত। সেই আরাকানে এখন যারা পালাচ্ছে, তারা বৌদ্ধ রাখাইন। স্থানীয় মুসলমান রোহিঙ্গাদের বড় অংশ তিন বছর আগেই গণহত্যার মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাই পুরো প্রদেশই ক্রমে খালি হয়ে যাচ্ছে। থাকছে কেবল দুটো সশস্ত্র পক্ষ—মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় প্রতিরোধ যোদ্ধাদল ‘আরাকান আর্মি’। মিয়ানমারের বড় কূটনৈতিক সফলতা হলো চীন, ভারত, জাপানসহ এশিয়ার সব প্রভাবশালী রাষ্ট্রকে তারা আরাকানে মানবাধিকার দলনের বিষয়ে নীরব রাখতে পারছে। বাংলাদেশের সামনে তাই আরাকান একই সঙ্গে এক সামরিক ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ আরাকান আর্মির সঙ্গে পারছে না ‘টাটমা-ড’ মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী ‘টাটমা-ড’ নামে পরিচিত। টাটমা-ড দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী ও সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠান। মন্ত্রিসভায়ও তাদের তিনজন প্রতিনিধি থাকেন। পাঁচ লাখ সদস্যের বিশাল জনবল তার। গেরিলাযুদ্ধ মোকাবিলায় টাটমা-ডর বিশেষ সুনাম আছে। গত ৭২ বছর বিশ্বখ্যাত অনেক গেরিলা বাহিনীর স্বাধিকারের সংগ্রাম ঠেকিয়ে তারা ‘ইউনিয়ন-মিয়ানমার’-এর অখণ্ডতা রক্ষা করে চলেছে। কিন্তু আরাকানে তারা নবীন আরাকান আর্মির সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। ইমেজ বাঁচাতে টাটমা-ডর জেনারেলরা আরাকানে চালাচ্ছে পোড়ামাটি নীতি। ২০১৭ সালে তারা রোহিঙ্গা গ্রামগুলো ছারখার করেছিল। এখন পুড়ছে রাখাইনদের বাড়িঘর। গত সপ্তাহে রাথিডং এলাকায় সেনা ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানকালে বিমানবাহিনীও ব্যাপক গোলাবর্ষণ করে। এত দিন এ রকম আক্রমণে কেবল হেলিকপ্টার বহর অংশ নিত। আরাকানের আকাশে যত্রতত্র দেখা যাচ্ছে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। আরাকান আর্মি কারা মিয়ানমারে গেরিলা গ্রুপের কমতি নেই। কোনো কোনোটির বয়স ৫০-৬০ বছর। সেই তুলনায় আরাকান আর্মি অতি নবীন। ২০০৯ সাল থেকে এই সংগঠনের নাম শোনা যেতে থাকে। আরাকানকে বর্মীদের দখলমুক্ত করাই তাদের লক্ষ্য। স্বঘোষিত জেনারেল থন মাট নইঙ এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বলা হয়, আরাকান আর্মি ইউনাইটেড আরাকান লিগের সশস্ত্র শাখা, যারা হৃদয়ে লালন করে অতীতের স্বাধীন আরাকানের ইতিহাস। তবে বর্তমান যুদ্ধের তাৎক্ষণিক সামরিক কারণ, প্রদেশের উত্তরাঞ্চলে আরাকান আর্মির ঘাঁটি এলাকা গড়তে চাওয়া। এ রকম দুর্ভেদ্য সামরিক উপস্থিতির মাধ্যমে কাচিন, কারেন ও শানরা ইউনিয়ন মিয়ানমারে থেকেও নিজ নিজ এলাকায় নিজস্ব বেসামরিক প্রশাসন পরিচালনা করছে। ঠিক ও রকম লক্ষ্য নিয়ে আরাকান আর্মির গেরিলারা দলে দলে আরাকানে ঢুকছে। চিন প্রদেশের যে পালিতোয়া এলাকা দিয়ে তারা আরাকানে ঢুকছে, সেটা বাংলাদেশের বান্দরবান-সংলগ্ন। বান্দরবান থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ি পালিতোয়া শহর। এ এলাকাই এখন যুদ্ধের মূল উত্তাপকেন্দ্র। তবে আরাকান আর্মির গেরিলারা উত্তর আরাকানের প্রায় প্রতিটি গ্রামে হাজির আছে এখন। ফলে মিয়ানমারের ইতিহাস নতুন করে আরেক চিরায়ত গেরিলাযুদ্ধ দেখছে। আরাকানে সশস্ত্র বাহিনীর পাশে সু চির দল আরাকান যুদ্ধের প্রধান এক শিকার এই মুহূর্তের নির্বাচন। ১৯৯০-এর আগে-পরে আরাকানের রোহিঙ্গা ও রাখাইন—উভয় সম্প্রদায় সেনা শাসনের বিরুদ্ধে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির সমর্থক ছিল। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর রোহিঙ্গাবিরোধী সেনা অভিযানে যেমন এনএলডি সরকার চুপচাপ ছিল, এখন রাখাইনবিরোধী অভিযানকালেও অনুরূপ ভূমিকায়। উপরন্তু যুদ্ধের সুযোগ নিয়ে সু চি চাইছেন আরাকান থেকে স্থানীয় রাজনৈতিক দল ‘আরাকান ন্যাশনাল পার্টি’কে দুর্বল করে প্রদেশজুড়ে তাঁর দলকে একচেটিয়া করতে। ইতিমধ্যে মহামারির কথা বলে আরাকানের অনেক জায়গায় নির্বাচন হবে না বলে দেওয়া হয়েছে। এতে আরাকানের প্রায় ১২ লাখ রাখাইন এবার ভোট দিতে পারবেন না। মূলত আরাকান ন্যাশনাল পার্টিকে ঠেকাতে এই আয়োজন। কারণ, এই দলকে আরাকান আর্মির প্রতি সহানুভূতিশীল বলে মনে করা হয়। অর্থাৎ টাটমা-ড যখন আরাকান আর্মির ওপর বোমা ফেলছে, এনএলডি তখন সেখানকার রাজনৈতিক নেতৃত্বকে অকার্যকর করার চেষ্টা করছে। পাল্টা হিসেবে আরাকান আর্মিও এনএলডির কয়েকজন প্রার্থীকে অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশের জন্য পরিস্থিতি উদ্বেগের বাংলাদেশের জন্য এই অবস্থা ভূরাজনীতির দিক থেকে উদ্বেগজনক ও গভীরভাবে তাৎপর্যময়। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত বেশি বড় নয়, ২০০ মাইলের কম। কিন্তু অশান্ত আরাকান বাংলাদেশের স্বস্তি কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এটা সত্য যে আরাকান এখনই আরাকান আর্মির পূর্ণ দখলে যাচ্ছে না। কিন্তু ক্রমে মাঠের পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে। স্থানীয় রাখাইনরা ইতিমধ্যে তাদের নীরব কর্মী হিসেবে কাজ করছে। পাশাপাশি টাটমা-ডর আক্রমণও বাড়ছে এবং আরও বাড়বে। রাখাইনদের বাংলাদেশে শরণার্থী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের রাখাইনরা আরাকানে মানবাধিকার দলনের প্রতি দৃষ্টি কাড়তে ঢাকায় বড় ধরনের বিক্ষোভ সমাবেশও করেছে। দ্বিতীয়ত, আরাকানে টাটমা-ডর নিয়ন্ত্রণ কমতে থাকলে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে রাখাইনদের আন্তসম্পর্ক কেমন দাঁড়ায়, তার ওপরও নির্ভর করবে রোহিঙ্গাদের বাড়ি ফেরার বিষয়টি। এই উভয় সম্প্রদায়ের ভেতর ক্ষুদ্র অনেক উগ্রবাদী ধারা রয়েছে, যারা পারস্পরিক সংঘাতে লিপ্ত হতে পারে। এ রকম অস্থিতিশীলতা এই অঞ্চল দিয়ে মাদকের চোরাকারবার বাড়িয়ে দিতে পারে। যে সমস্যায় বাংলাদেশ ইতিমধ্যে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তৃতীয়ত, আরাকান যুদ্ধে নিজেদের সামরিক ব্যর্থতা আড়াল করতে মিয়ানমার রাখাইন গেরিলাদের পেছনে বাংলাদেশের মদদ আবিষ্কার করতে পারে। ইতিমধ্যে দেশে-বিদেশে এ রকম প্রচারণা শুরু করেছে তারা। বঙ্গোপসাগরে অস্থিতিশীলতা বাড়াতে পারে টাটমা-ডর বহুমাত্রিক প্রচারণা সত্ত্বেও বিশ্বসমাজ আরাকানের ঘটনাবলি পুরোপুরি অবহিত বলেই মনে হচ্ছে। সেখানে টাটমা-ডর পোড়ামাটি নীতির বিরুদ্ধে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা প্রায়ই উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তবে মিয়ানমারের বড় কূটনৈতিক সফলতা হলো চীন, ভারত, জাপানসহ এশিয়ার সব প্রভাবশালী রাষ্ট্রকে তারা আরাকানে মানবাধিকার দলনের বিষয়ে নীরব রাখতে পারছে। বাংলাদেশের সামনে তাই আরাকান একই সঙ্গে এক সামরিক ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ। টাটমা-ড সম্প্রতি উসকানিমূলক তৎপরতা হিসেবে সীমান্তে সৈন্য সংখ্যাও বাড়াচ্ছে। বিজিপি নামে পরিচিত রাখাইন প্রদেশের সীমান্ত পুলিশের তিনটি নতুন ব্যাটালিয়নও গড়ছে তারা। যেসব সামরিক অফিসারকে সেনাবাহিনী থেকে সীমান্ত পুলিশে পাঠানো হচ্ছে, তারা মাঠপর্যায়ের অভিযানে বিশেষ দক্ষ হিসেবে বিবেচিত। এসবই বাংলাদেশের জন্য বাজে ইঙ্গিত। এভাবে টাটমা-ড ও সু চির দল এনএলডির দ্বিমুখী রাজনৈতিক ও সামরিক যৌথ অভিযানে বাংলাদেশের পাশে নতুন যে অগ্নিগর্ভ আরাকান তৈরি হচ্ছে, তা বঙ্গোপসাগরের এই অঞ্চলজুড়ে বাড়তি অস্থিতিশীলতার ইঙ্গিতবহ। আলতাফ পারভেজ: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ের গবেষক https://www.prothomalo.com/opinion/column/অগ্নিগর্ভ-আরাকান-নিয়ে-নতুন-উদ্বেগ
  13. রাখাইনে সৈন্য সমাবেশ, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব নিজস্ব প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম Published: 13 Sep 2020 10:45 PM BdST Updated: 13 Sep 2020 10:45 PM BdST রাখাইনে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের সদস্যের সতর্ক অবস্থানের এই ছবি ২০১৭ সালের। ফাইল ছবি: রয়টার্স সীমান্তে মিয়ানমার সেনাদের সন্দেহজনক গতিবিধির মধ্যে ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করল বাংলাদেশ। রোববার বিকালে রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে ডেকে পাঠানো হয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার উইংয়ের মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, “আমরা উনাকে ডেকেছিলাম এবং আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। বলেছি, তিনি যেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের বার্তা পৌঁছে দেন।” বাংলাদেশ-মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্তে শুক্রবার ভোর থেকে মাছ ধরার ট্রলারে করে মিয়ানমারের সেনাদের সন্দেহজনক গতিবিধির খবর দেয় বিভিন্ন গণমাধ্যম। সীমান্ত এলাকায় কয়েকটি পয়েন্টে গত কয়েক দিনে মিয়ানমার সৈন্যদের উপস্থিতি দেখার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, রাখাইনের আরাকান আর্মির সঙ্গে যে সংঘাত চলমান, তার অংশ হিসাবে সৈন্যদের আসা-যাওয়া হতে পারে। সেখানে এমন সন্দেহজনক গতিবিধি ঘটলে বাংলাদেশের উদ্বেগের কারণ রয়েছে। তিন বছর আগে রাখাইনে সেনা অভিযানের পর দমন-পীড়নের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে আসে বাংলাদেশে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাখাইনে সংঘাত এলাকায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীও রয়েছে। সে কারণে আমাদের জন্য তা বেশ উদ্বেগের। আবার যদি কোনো কারণে রোহিঙ্গা ঢল নামে আমাদের চাপের উপর চাপ বাড়বে।” ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। গত বছর দু’দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা। রাখাইনে সৈন্য সমাবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়ও রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
  14. BAF radar recently installed in Barisal, can it give assistance to civil aviation if needed ?
  15. বাংলাদেশ-ভারত–চীন সম্পর্কে মোড় পরিবর্তনের সময় এল কি বাংলাদেশের সামনে আঞ্চলিক রাজনীতির চ্যালেঞ্জটি অনেক বড়। তবে মোকাবিলাযোগ্য। রাজনীতিবিদেরা সেই অসম্ভবের শিল্পকলা জানেন। আলতাফ পারভেজ প্রকাশ: ১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:৫১ অ+অ- বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আজকাল অনেক ভাষ্যকারের কলমেই বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের আলোচনা শুরু হয় ১৯৭৬ সাল থেকে। কিন্তু পূর্ব বাংলার প্রধান রাজনীতিবিদদের অন্তত দুজন একাধিকবার গণচীন সফর করেছেন ১৯৭০ সালের আগেই। আবার বাংলাদেশে তরুণদের একাংশের মধ্যে মাও সে তুংয়ের রাজনৈতিক আদর্শের চর্চার শুরু তারও আগে থেকে। যেকোনো দুটি জনপদের সম্পর্ক অবশ্যই দূতাবাস খোলার চেয়েও বেশি কিছু। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক পরিচয়ের শুরুও ১৯৭৬ সালের জানুয়ারির আগেই। ১৯৬৭ সালে মাওলানা ভাসানীকে দেওয়া মাও সে তুংয়ের ট্রাক্টরটি পারস্পরিক ওই পরিচয়ের প্রতীকীচিহ্ন হয়ে টাঙ্গাইলে এখনো টিকে আছে। বঙ্গবন্ধুর ১৯৫২ সালের চীন সফরের বিস্তারিত বিবরণও বেশ মনোযোগ কেড়েছে সম্প্রতি। এসব সফর কোনো সাধারণ ভ্রমণ ছিল না; বরং দুই জনপদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছিল তাতে। ছয়-সাত দশকের পরিক্রমা শেষে বাংলার সঙ্গে চীনের সেই সম্পর্ক আজ নতুন এক সন্ধিক্ষণে উপস্থিত। সেই তুলনায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধন অবশ্যই আরও পুরোনো, ঐতিহাসিক ও বহুমাত্রিক। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ইতিহাসের প্রায় প্রতি অধ্যায়ে ভারতীয় ছোঁয়া আছে। তার চিরদিনের সাক্ষী হয়ে আছেন খোদ রবীন্দ্রনাথ-নজরুল। কিন্তু এ সম্পর্কের গাঁথুনিতে হঠাৎ কোথাও যেন টান পড়েছে। অচেনা এই কম্পনের উৎস খুঁজতে গিয়ে কেউ পাচ্ছেন আগ্রাসী এক ড্রাগনের ছায়া, কেউ দেখছেন মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছার প্রয়োজনীয় সিঁড়ি। বিজ্ঞাপন প্রচারমাধ্যমের ভুল বার্তা বাংলাদেশ-ভারত-চীন সম্পর্ক নিয়ে ধারাভাষ্যকারদের নাটকীয় লেখালেখি বিশেষ গতি পেয়েছে গত ১৮ আগস্ট ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের বাংলাদেশ সফরে। হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা কেন এলেন, আনুষ্ঠানিক বৈঠকের ছায়ায় অনানুষ্ঠানিক আলাপে কী আদান-প্রদান হলো, তার সামান্যই জানা গেছে। আবার যতটুকু জানা গেল, সেই তুলনায় গল্পগুজব তৈরি হলো শতগুণ বেশি। অথচ আরেকটু পেছনে ফিরে তাকালেই আমরা দেখব ২০১৩ সালে চীন যখন বিআরআই প্রকল্পে সবাইকে আহ্বান করে, ভারত তখনই ঘোষণা করে ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতি। অর্থাৎ ঢাকার সামনে ভূরাজনীতির নাটকীয়তা হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার এই সফরের বহু আগেই তৈরি হয়ে আছে। বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জটি আসলে অন্য রকম। চীন-ভারত উভয়ের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতা প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার। ডলার গুনতে আগ্রহী যেকোনো সরকার এই অবস্থা বদলাতে চাইবে। কিন্তু পত্রিকাগুলো মনোযোগ সরাতে চাইছে অন্যদিকে, যা জনগণকে ভুল বার্তা দেয় এবং সরকারের জন্য মানসিক চাপ বাড়ায়। একতরফা ভালোবাসায় সম্পর্ক গভীরতা পায় না ভারতে যদি এই প্রশ্ন তোলা হয়, নিকট প্রতিবেশী কোন দেশে তাদের প্রভাব এ মুহূর্তে বেশি, নিঃসন্দেহে তাতে এক-দুটি নামের মধ্যেই বাংলাদেশ থাকবে। এখানে রাজনীতির পাশাপাশি সংস্কৃতির পরিসরেও তাদের গর্ব করার মতো প্রভাবের পরিসর আছে। হিন্দির উপস্থিতি আজ শ্রেণিনির্বিশেষে ঘরে ঘরে। বইয়ের দোকানগুলোয় দেশের বই ছাপিয়ে আছে ভারতীয় প্রকাশনা। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একাংশ যদি হয় বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ, একমাত্র ভারতীয়দের সঙ্গেই বাংলাদেশিদের সেটা কিছুটা আছে। মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন ও সহায়তা সেই যোগাযোগের ভিত্তি হয়ে আছে। স্বর্ণালি সেই ঐতিহ্যে ভারতীয়রা আজ আর পুরো ভরসা রাখতে পারছে না বলেই মনে হয়। দেশটির সংবাদমাধ্যমের সাম্প্রতিক ভাষ্যগুলোয় সেই মনোজাগতিক সংকটের ছাপ মেলে হামেশা। বিজ্ঞাপন সেই তুলনায় চীনের ভাষা-সাহিত্য-মুভির প্রভাব ঢাকায় বিরল। চীনপন্থী দল-উপদল-গণসংগঠন বলে এখন আর স্পষ্ট কিছু নেই এখানে। আমাদের সাহিত্যে কলকাতার মতো ঐতিহাসিক কোনো চীনা ভরকেন্দ্র নেই। ইট-সিমেন্ট-বালু-রডের গাঁথুনি এবং মাওবাদ ছাড়া বেইজিং বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বিশেষ কিছু দিতে পারেনি এখনো। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ক্ষেত্রেও চীন থেকে আমরা ভবিষ্যতে ঠিক কী নিতে পারব, বলা মুশকিল। সঙ্গে রয়েছে জাতিসংঘে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের তিক্ত স্মৃতি। অথচ এর বিপরীতে তুলনা করা যায় মুক্তিযুদ্ধে আহত-নিহত ভারতীয় যোদ্ধাদের অবদানের কথা, শরণার্থীদের প্রতি আসাম-ত্রিপুরা-পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সহমর্মিতার স্মৃতি। যুদ্ধোত্তর দিনগুলোতেও ভারত অবশ্যই নবীন রাষ্ট্রে বড় ভরসা ছিল। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সম্পর্ককে ‘রক্তের বন্ধন’ বলে ভুল বলেননি। গত দশকে স্থল ও সমুদ্রসীমানা নিয়ে বোঝাপড়ায় সামান্য অপূর্ণতাসহ অনেকখানি ঝামেলা মেটানো গেছে দুই দেশের মধ্যে। কোভিডের আগ পর্যন্ত ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানিও বেড়েছে কিছু। দুই প্রতিবেশীর মধ্যে এসব গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। ভারতের ভিসা পাওয়ার ব্যবস্থাপনায়ও বড় ধরনের সংস্কার ঘটেছে। বাংলাদেশিদের বছরে প্রায় ১৫ লাখ সফর হয় ভারতে। ভিসা ব্যবস্থাপনার সংস্কারে লাভবান হয়েছে উভয় পক্ষ। তবে ভারত যে সময় যতটা দিয়েছে, ঢাকার প্রতিদান ছিল বহুগুণ বেশি। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসে ভারত যে অগ্রাধিকার পেল, ভারতীয় ভাষ্যকারদের কলমে তার কিন্তু কোনো প্রশংসা পাওয়া গেল না। এর আগে উত্তর-পূর্ব ভারতের অর্থনীতির সহায়তায় নিজের সীমানা দিয়ে স্থল ও নৌপথে সর্বাত্মক যোগাযোগ সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ। একই অঞ্চলের নিরাপত্তাসংকট সামলাতেও ভারতের চাওয়া পূরণ হয়েছে। নয়াদিল্লির বড় প্রত্যাশা ছিল এসব। বন্ধুত্বকে অর্থবহ করতে বাংলাদেশ তা মিটিয়েছে। এভাবে ১৯৭১-পরবর্তী বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অডিট করলে বাংলাদেশের আন্তরিকতার ছাপই বেশি নজরে পড়ে। কিন্তু ছোট প্রতিবেশীকেই কেন বেশি দিতে হবে? কেন ভুলে যাব, ইতিহাসে কোনো নিবেদনই চিরস্থায়ী নয়। আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্কে বন্ধুত্ব ও দূরত্বও স্থায়ী কিছু নয়। একতরফা ভালোবাসায় সম্পর্ক গভীরতা পায় না। পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে নির্বাচনকালে বাংলাদেশবিরোধী যেসব কদাকার প্রচারণা চলে, তার ওপর দাঁড়িয়ে বন্ধুত্বকে গভীরতা দেওয়া দুরূহও বটে। এসব রাজনৈতিক প্রচারণা বাংলাভাষীদের মনস্তত্ত্বকে ১৯৪৭ পেরিয়ে সামনে এগোতে দিচ্ছে না। গুজরাল-ডকট্রিন থেকে বহুদূর সরে গেছে সম্পর্কের লক্ষ্মণরেখা। আন্তনদী সংযোগ প্রকল্পগুলো যে বাংলাদেশের হৃদয়ে কতটা উদ্বেগ তৈরি করেছে, ভারতের হৃদয় তা কতটা বুঝতে চেয়েছে? ‘বাংলাদেশিরা হলো উইপোকার মতো’—এমন অভিধার জন্যও সীমান্তের ওপার থেকে কেউ দুঃখ প্রকাশ করেনি। ধারাবাহিক এসব দূরত্ব ও বন্ধ্যত্বের মধ্যেই চীনের আবির্ভাব। বিজ্ঞাপন চীন দুনিয়াজুড়ে এখন শিষ্য খুঁজছে চীন অনেক ধৈর্য ধরে ধরে ইটের পর ইট গেঁথে ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ককে আজকের অবস্থানে এনেছে। একাত্তর থেকে ছিয়াত্তর পর্যন্ত তারা পিছিয়ে পড়েছিল। দুর্দান্ত মনোযোগে তারা সেই দূরত্ব গুছিয়েছে। রাজনৈতিক দল, ভাবাদর্শ, সংগীত, চিত্রকলা, ছাত্রবৃত্তিকে তারা কমই ব্যবহার করেছে বাংলাদেশ জয় করতে। বরং শক্তপোক্ত এক অর্থনৈতিক-সামরিক ভরসা হয়ে ক্রমে তারা বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের গরিমায় সাহায্য করেছে। দক্ষিণবঙ্গের বেকুটিয়ায় নির্মাণাধীন সেতুটিসহ আটটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু বানাতে সহায়তা দিয়ে বেইজিং শুরু থেকে বার্তা দিচ্ছিল তারা নতুন বাংলাদেশের (উন্নয়ন) ক্ষুধা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। চীনের এই বোঝাপড়া নিঃসন্দেহে কলকাতা-গুয়াহাটি-আগরতলা থেকে আসা কবিতা-গান-নাটক-সিনেমাকেন্দ্রিক ভাবাবেগের চেয়ে বেশি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। পদ্মা সেতুর রেললাইন কিংবা কর্ণফুলীর টানেলে যুক্ত হয়ে চীন বাংলাদেশের কাছে বন্ধুত্বের নতুন মানে দিয়েছে। ৩০০ থেকে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশের জন্য চীনের অনুদান বিপুল, ঋণ বিপুল এবং অঙ্গীকার আরও বিপুল। বাংলাদেশের হৃদয়েও এখন বদলে যাওয়ার বিপুল ক্ষুধা। ২০১৬ সালের ২৪ বিলিয়ন ডলারের ক্রেডিট লাইন একটা ক্ষুদ্র সূচনামাত্র, যদি আমরা সামনের দিকে তাকাতে শিখি। এমনকি ভারতের ৭ বিলিয়ন ঋণের অঙ্কও না বাড়ারও কারণ নেই। বাংলাদেশে বেইজিংয়ের এই অগ্রযাত্রায় ভারতের আপত্তি নেই। আপত্তির সুযোগও ছিল না। বাংলাদেশে চীনের গড়া প্রতিটি অবকাঠামো থেকে পরোক্ষে ভারতীয় অর্থনীতিও লাভবান। সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অন্যতম সুবিধাভোগী কলকাতার নিউমার্কেট থেকে ভেলোরের হাসপাতালগুলোও। চীনের অবকাঠামোগত অবদান আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের কাছে রাজনৈতিক সহযোগিতার প্রত্যাশা করতে পারে। এটা অস্বাভাবিক নয়। নয়াদিল্লির দিক থেকে বন্ধুত্ব হারানোর কল্পিত উদ্বেগের শুরু হয়তো এখান থেকেই; যে বন্ধুত্ব হয়তো স্থায়ী বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল কিংবা যে বন্ধুত্বকে ভুল করে কেউ আনুগত্য ভেবেছেন। সাম্প্রতিক ভারতীয় ধারাভাষ্যকারদের প্রত্যাশার সোজাসাপ্টা মানে হলো বাংলাদেশ যত ইচ্ছা চীনা অর্থনৈতিক সহায়তা নিক, রাজনৈতিক আধিপত্যে নয়াদিল্লির আবেগের মর্যাদা দিয়ে চলুক এবং চীনের সঙ্গে সামরিক সম্পর্কও এড়িয়ে চলুক। কিন্তু প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে সাবমেরিন কিনে বাংলাদেশে মৃদুভাবে জানিয়েছে, নিরাপত্তা ইস্যুতেও তাকে এখন স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে শিখতে হবে। অন্তত রোহিঙ্গা-অধ্যায়ের পর বাংলাদেশ কীভাবে আর তার সামরিক শক্তি-সামর্থ্য না বাড়িয়ে থাকতে পারে? আবার ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক পরিসরে চীনও ‘পরাশক্তি’ হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। অভূতপূর্ব এক আগ্রাসী কূটনীতির মাধ্যমে নিজের অভিলাষের কথা জানাচ্ছে তারা দুনিয়াজুড়ে। বিজ্ঞাপন যেকোনো নেতারই কিছু শিষ্য দরকার হয়। চীন দুনিয়াজুড়ে এখন শিষ্য খুঁজছে। মধ্য আয়ের দেশের চলতি পর্যায় পেরোতে বাংলাদেশের সবল-সুঠাম-উচ্চাকাঙ্ক্ষী চীনকে দরকার আছে কি না সেটা ঢাকার নীতিনির্ধারকদেরই সিদ্ধান্ত নিতে দিতে হবে। এ সত্যে আঁতকে ওঠার কিছু নেই—চীন ভারতের চারপাশে প্রভাববলয় বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশের বিষয়েও তারা নিরাসক্ত নয়। বিশ্বের সব পরাশক্তি অতীতে আধিপত্য কায়েম করেছে। ভারতসহ অন্য যারা ভবিষ্যতে পরাশক্তি হতে চাইবে, তাদেরও এভাবেই চারদিকে ‘বিনিয়োগ’ বাড়িয়ে যেতে হবে। নেতৃত্ব সব সময় দাপট দাবি করে; সঙ্গে উদারতাও। ৯৭ ভাগ বাংলাদেশি পণ্যকে ট্যারিফ ছাড় দিয়ে চীন সর্বশেষ উদারতা দেখাল। এখন হয়তো ঢাকার কিছু দেওয়ার পালা। তারপরও ভারত বাংলাদেশের জন্য এক মুখ্য বিবেচনা বাংলাদেশ নিয়ে চীন-ভারতের আগ্রহকে ঢাকায় ইতিবাচকভাবেই দেখা উচিত এবং সম্ভবত এখনো তা-ই ঘটছে। চীন-ভারত উভয়ের সঙ্গেই বাণিজ্যের আয়তন ক্রমে বাড়ছে। অন্তত সাম্প্রতিক কোনো বছরই কমেনি। তবে সব সময় ভারসাম্য রক্ষা সহজ নয়। হয়তো প্রয়োজনও নেই এবং লাদাখ সংঘাতের পর সেটা দুরূহ বটে। রংপুরের মতো প্রায় প্রান্তিক অঞ্চলে তিস্তাকে উপলক্ষ করে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার পাওয়ার দৃশ্য বলছে, আসন্ন ভূরাজনীতি বাংলাদেশের জন্য সাহায্য-সহযোগিতা-বিনিয়োগের নতুন তরঙ্গ নিয়ে আসতে পারে। বছরে ২০ লাখ তরুণকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে হলে অর্থনীতিতে যেভাবে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হবে, তাতে ওই তরঙ্গে নৌকা ভাসানো ছাড়া বিকল্প কী? তবে অসুবিধার দিকও আছে। দেশের জন্য ঋণের ফাঁদ এবং দুর্নীতির সংস্কৃতি জোরদার হতে পারে এতে। দেশি-বিদেশি সম্পদ কীভাবে খরচ হয় বা হওয়া উচিত, এ নিয়ে গণনজরদারির সঠিক ব্যবস্থা গড়া যায়নি আজও। বাড়তি অর্থ মানেই দুর্নীতির বাড়তি শঙ্কা তৈরি করে। ঋণখেলাপি হয়ে পড়া এবং সম্পদ পাচার তথাকথিত উদ্যোক্তাদের যে মজা এনে দিয়েছে, তাতে চীনকে তাঁরা ভবিষ্যৎ-বান্ধব হিসেবে দেখতে পারেন। পাশাপাশি মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের মধ্যেও চীনের দুর্নাম কম। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে চীন কখনোই মোটাদাগে হস্তক্ষেপ করেনি। আবার উইঘুরের মুসলমানদের দুর্দশার গল্পগুলো এখনো কাশ্মীর বা আসামের মুসলমানদের মতো মনোযোগ পায়নি; বাবরি মসজিদের মতো তো নয়ই। এ রকম একটা রিপোর্ট-কার্ড আঞ্চলিক সুনাম-দুর্নামে চীনকে এগিয়ে রেখেছে। পক্ষান্তরে নয়াদিল্লির নীতিনির্ধারকেরা কেন আজও বাংলাদেশ সীমান্তে বেসামরিক মানুষের রক্তঝরা বন্ধ করতে পারলেন না, তা দুঃখজনক। বন্ধুত্ব এবং রক্তপাত একদম বিপরীতমুখী। সার্ক না থাকায় সে কথা বলারও জায়গা নেই। সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পরও তিস্তার প্রবাহ নিয়ে চুক্তি না হওয়ায় কী বার্তা পেল বাংলাদেশের মানুষ? ৫৪টি আন্তনদীর দু–চারটির পানি নিয়েও কেন উভয় দেশ সমঝোতা করে উঠতে পারল না গত পাঁচ দশকে, তা বিস্ময়কর। গ্রীষ্মে শুকিয়ে থাকা নদীগুলোর দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশিদের যে বোবা ক্ষোভ হয়, তা বন্ধুত্বের অতীত দিয়ে কত আর মিটমাট করা যায়। এমনকি, ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিতর্কে বাংলাদেশের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশও ঢাকার পক্ষে মেনে নেওয়া শক্ত, বিশেষ করে যখন মেঠো বাস্তবতায় তার সমর্থন দুর্লভ। তারপরও ভারত বাংলাদেশের জন্য এক মুখ্য বিবেচনা। চার হাজার কিলোমিটারের চেয়েও দীর্ঘ সীমান্ত উভয়ের। এ সত্য অগ্রাহ্য করা যায় না। ভবিষ্যতে এ সম্পর্ক আরও বেশি মনোযোগ ও যত্ন দাবি করতে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বিশেষ বন্ধু এখন। আবার যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বড় বাজারও। বড় বিনিয়োগ পেতে গিয়ে বড় বাজার হারানোর ঝুঁকি নেওয়া যায় না। বিজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জটি অনেক বড়, তবে মোকাবিলাযোগ্য চীনকে নিয়ে ভাবতে বসে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের সাম্প্রতিক উদীয়মান মৈত্রীও বাংলাদেশ অগ্রাহ্য করতে পারে না। বিশেষ করে যখন তুরস্ক ও ইরানের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্কে অর্থনৈতিক গভীরতা বেশি নয়। তবে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব ফিরে পেতে পাকিস্তানের পুনঃপুন আগ্রহ বাংলাদেশের বাজারমূল্য বাড়াচ্ছে বৈকি। যেকোনো সরকারকে পূর্বাপর ভেবেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আসামে প্রায় ২০ লাখ বাংলাভাষী হিন্দু-মুসলমান ‘বাংলাদেশি’ পরিচয়ের এক রহস্যময় রাজনীতির করুণ শিকার হয়ে আছে। পশ্চিমবঙ্গেও তথাকথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের রাজনীতি সরব। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যের চলতি মাত্রার সঙ্গে এসব অনুপ্রবেশের ‘গল্প’ বেমানান হলেও আঞ্চলিক ভূরাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন বিষয় নয় পশ্চিম-উত্তর সীমান্তের এই দুই দৃশ্য। একই রকমভাবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানও কোনোভাবেই চীনকে অসন্তুষ্ট করে সম্ভব নয়। বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান এখন পর্যন্ত স্বচ্ছ। কোনো রকম ছদ্মযুদ্ধে নেই ঢাকা। কিন্তু আমাদের আরও বহুদূর এগোতে হবে। দুঃখজনক হলো আঞ্চলিক টানাপোড়েনে বাংলাদেশের জন্য এসব শুভ-অশুভ সংকেত নিয়ে কেবল সরকারকে একাকী সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। ‘জাতীয় ইস্যু’তে ‘জাতীয় ঐকমত্য’ চিরদিনই অধরা এ দেশে। স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর এসব নিয়ে ভাবনাচিন্তার প্রকাশ্য কোনো চেষ্টাই নেই। জনগণের তরফেও মতামত প্রকাশের কাঠামো নেই। ভূরাজনীতিতে ঐতিহাসিক মোড় পরিবর্তনের এই মুহূর্তে বাংলাদেশের নাগরিকেরা কেবল দর্শকের ভূমিকাতেই থাকছেন আপাতত। ছায়া-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর রেওয়াজ এ দেশে বরাবরই অনুপস্থিত। কোনো দল ভূরাজনীতি নিয়ে ইদানীং কোনো সভা-সেমিনার-বৈঠক করেছে বলে দেখা যায় না। অথচ এ রকম কথাবার্তার মধ্যেই জাতীয় আকাঙ্ক্ষার হদিস মিলত। এ রকম আলোচনায় চীন-ভারতের প্রতিনিধিদের কাছে আমরা রোহিঙ্গা সংকটে তাদের নিষ্ক্রিয়তার ব্যাখ্যা শুনতে পারতাম। তবে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে অভিমান আর স্থবিরতার মূল্য নেই। বাংলাদেশ গভীর সমুদ্রবন্দর বানাতে না দিলেও পাকিস্তান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কায় চীন ইতিমধ্যে সেটা বানিয়েছে এবং বাংলাদেশের ওপর অভিমান করে বসে নেই। বাংলাদেশ একই উপকূলে অন্য দেশকে রাডার সিস্টেম বসাতে দিলেও চীন হয়তো অভিমান করে বসে থাকবে না। ইতিবাচক কূটনীতির ধরনই আজকাল এ রকম। বাংলাদেশকেও একইভাবে চলতি নতুন ঐতিহাসিক মুহূর্তটিকে হাতের মুঠোয় নিতে হবে। এ চ্যালেঞ্জে জনগণকে যতটা সম্পৃক্ত করা যাবে, ততই সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হতে পারে। খেয়াল করলে দেখা যায়, মানচিত্রে ঢাকা-নয়াদিল্লি-বেইজিংয়ের মধ্যে রেখা টানলে একটা ত্রিভুজ তৈরি হয়। সেটা বিষমবাহু ত্রিভুজ। এ রকম ত্রিভুজের বাহু, মধ্যমা, কোণ, লম্ব—সবই অসমান। বাহুর দৈর্ঘ্য জানা থাকলেই কেবল বিষমবাহু ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা যায়। বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জটি তাই অনেক বড়। তবে মোকাবিলাযোগ্য। রাজনীতিবিদেরা সেই অসম্ভবের শিল্পকলা জানেন। আলতাফ পারভেজ: দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ে গবেষক
  16. https://www.berichbd.com/ It is an online brokerage house. Please visit their website.
  17. Very good news for the exporters as well as importers of raw materials from China. Currently it takes 3-4 weeks to get materials.
  18. This is a very good news for our country. We should gradually move to hi tech industries.
  19. The construction yard of Padma Bridge in Munshiganj has collapsed. Already, 35 roadway slabs, 15 railway girders and 10 support pipes of the bridge have been destroyed. On Friday (July 31) afternoon, about 200 feet of defense wall was lost in the Padma. In the presence of officials from the contractor company China Major Bridge Company and the bridge authority, an attempt was made to remove the cranes urgently to protect these assets. But it was not possible. The severity of the erosion is so high that even the cranes are quickly removed if there is a risk of sinking in the reverse Padma. One by one, the valuable materials of the Padma Bridge preserved in the yard are disappearing in front of our eyes. Dewan Abdul Quader, executive engineer of the Padma Bridge, told Sangbad that the intensity of the Padma current is so high that nothing can be done in this situation. The demolition is underway in the southeastern part of the yard.
×
×
  • Create New...